ঢাকা: সীমান্তে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক কাঁটাতারের বেড়া স্থাপনসহ বিভিন্ন সমস্যাজনক কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম, ভারত এতদিন যে অবৈধ সুবিধা নিয়েছে, সেটা আর নেবে না। কিন্তু সম্প্রতি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁর পত্নিতলা, লালমনিরহাট এবং তিন বিঘা করিডরে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিজিবির শক্ত অবস্থানের কারণে এসব জায়গায় কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিএসএফ।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালের সমঝোতা অনুযায়ী, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রতিরক্ষা স্থাপনা বা উন্নয়নমূলক কাজ করতে হলে পারস্পরিক সম্মতি প্রয়োজন। কিন্তু বিএসএফ এ নিয়ম মানছে না।
তিনি জানান, ভারত ইতোমধ্যে ৩,২৭১ কিলোমিটার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। বাকি ৮৮৫ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অতীতে দেওয়া কিছু অসম চুক্তি এই সমস্যাকে আরও জটিল করেছে।
১৯৭৪ সালের বেরুবাড়ি চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা চুক্তি অনুযায়ী আমাদের অংশ ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু ভারত আমাদের পার্লামেন্টে অনুমোদিত করিডর এখনো সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত করেনি।”
আগামী মাসে বিজিবি ও বিএসএফের ডিজি পর্যায়ে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অসম চুক্তিগুলো বাতিলের প্রস্তাবও উত্থাপন করা হবে।
সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জনগণের ও বিজিবির শক্ত অবস্থানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “যত বাধাই আসুক, আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল থাকব।”
তিন বিঘা করিডরের ভেতরে দহগ্রাম ও আঙ্গোরপোতের বিশেষ অবস্থান এবং নাইটভিশন ক্যামেরা স্থাপনের মতো কর্মকাণ্ড সীমান্ত উত্তেজনা বাড়াচ্ছে। তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আশাবাদী যে, আগামী আলোচনা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে।